সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০

শিল্পশিবিরে একদিন





[ সালটা সম্ভবত ১৯৯৮। কলেজ স্কোয়ারে ইন্টারন্যাশনাল আর্ট ফেয়ার চলছে। তখনও জাঁকিয়ে শীত পড়েনি। একদিন দুপুরবেলা বাধনদা (শিল্পী বাধন দাশ) এসে হাজির। চা সিগারেট আর সেই সঙ্গে চলছে আড্ডা। সন্ধের মুখে বৃষ্টি নামল। বাধনদা এমন একটা জায়গায় বসেছিলেন বৃষ্টিতে তাঁর পিঠটা ভিজে যাচ্ছিল। আমি সরে আসতে বললাম। তিনি সরে না এসে হাসতে শুরু করলেন। তার ওইরকম হাসি আমি কখনও শুনিনি। কবিতাটির সৃষ্টি বাধনদার ওই হাসির শব্দ থেকেই  ]




একমাত্র তিনি ছাড়া শিল্পশিবিরের অন্যান্য শিল্পীরা
একস্তর রঙের ওপর আবার নতুন করে রঙ চাপাচ্ছেন
অনেকটা দূরে একটা গাছের নিচে 
সাদা ক্যানভাসটার সামনে তিনি একাকী বসে আছেন
হাতে চায়ের ভাঁড়, টিউবে রঙ, তুলি শোওয়ানো
মাঝে মাঝে চা খাচ্ছেন
পিছন থেকে কে একজন ডেকে উঠতেই 
তিনি ভাঁড় ছুঁড়ে তুলি নিয়ে ক্যানভাসে মেতে উঠলেন
অসংখ্য কালো রেখা ------- রেখার মিছিল
মনে হলো ক্যানভাস জুড়ে ভীষণ ঝড় উঠেছে
উঠলও তাই
রঙ ইজেল ক্যানভাস ফেলে যে যেদিকে পারল ছুটলো
সবকিছু দেখে তিনি হাসতে শুরু করলেন
আকাশ ফাটানো হাসি
তাঁর ওই ভীষণ হাসির শব্দে শিল্পশিবিরের সমস্ত ক্যানভাস
ঠিক মাঝ বরাবর হয়ে ফেঁসে যেতে লাগলো
আর সেইখান থেকে বেরিয়ে এলো
এক একটা কিম্ভুতকিমাকার প্রাণী, আর যাই হোক 
তাদের অন্তত কেউ মানুষ বলে ভুল করবে না 
দশ ও পনেরতলা ফ্ল্যাটের যে দু'জন শিল্পী
ধানের শীষ আঁকার চেষ্টা করছিলেন
তাদের ক্যানভাসের প্রাণীদুটোর শরীরে নখও ছিল

ঝড় থামতে সবাই শিবিরে ফিরে এসে দেখলো
টিউবের সব রঙ প্রাণীগুলো গায়ে মাখছে
ক্যানভাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে
গাছতলায় ইজেলে টাঙানো ক্যানভাসটি
তখনও অক্ষত অবস্থায় একাকী দাঁড়িয়ে আছে
কিন্তু শিল্পীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না ।


                  ***************************






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সিঁড়ি

  আমার ভাবনার মধ্যে  কখনও সিঁড়ি ছিল না চললে সিঁড়ি তো লাগেই তাই রাস্তায় সিঁড়ি আসে সিঁড়ি তো আসলে রাস্তা নদীর এগিয়ে চলার পথ সিঁড়ি দিয়ে ...